গাজীপুরে এডব্লিউডি প্রযুক্তির ব্যবহার শিখলেন প্রান্তিক কৃষকরা

এ এইচ সবুজ, গাজীপুর: ধানের জমিতে পানির অপচয় রোধ ও উৎপাদন ব্যয় কমাতে পানি সাশ্রয়ী (এডব্লিউডি) প্রযুক্তির উপর মাঠভিত্তিক প্রযুক্তি ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৪ মে) সকালে সদর উপজেলার যোগীতলায় পার্টনার ফিল্ড স্কুলের (পিএফএস) উদ্যোগে পানি সাশ্রয়ী (এডব্লিউডি) প্রযুক্তির উপর মাঠভিত্তিক প্রযুক্তি ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় অংশনেন এলাকার অগ্রগামী কৃষক-কৃষানীরা। এছাড়াও মাঠ প্রদর্শনীর মাধ্যমে তাদের হাতে-কলমে শেখানো হয় কীভাবে ধানের জমিতে প্রয়োজন অনুযায়ী পানি দেওয়া যায় এবং কখন নালা কেটে পানি ছেড়ে দেয়া হলে তা ফলনে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না।
ব্রি ধান-১০২ জাতের উপর ভিত্তি করে আয়োজিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (পিপি) মো: আব্দুল মতিন বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: হাসিবুল হাসান, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো: মাহে আলম, এসএপিপিও মাহিদুল ইসলাম এবং উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ওসমান মো: সোহেল। কর্মশালায় পার্টনার ফিল্ড স্কুলের আওতাভুক্ত কৃষক-কৃষাণি ছাড়াও আশপাশের গ্রামের প্রায় ৫০ জন কৃষক-কৃষানী উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজকরা জানান, এডব্লিউডি পদ্ধতি শুধু পানির সাশ্রয়ই করে না, একই সঙ্গে মাটির স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং পরিবেশবান্ধব চাষ পদ্ধতিকে উৎসাহিত করে।
একইসাথে সদর উপজেলার কৃষক-কৃষাণিদের দক্ষতা বাড়াতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। পার্টনার ফিল্ড স্কুল (পিএফএস) নামের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকেরা শিখছেন নিরাপদ ফসল উৎপাদন ও উত্তম কৃষি চর্চা। বর্তমানে উপজেলায় ছয়টি পিএফএস স্কুল চালু রয়েছে। এর আগে ১০টি স্কুলের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। প্রতিটি স্কুলে কৃষকদের মাঠপর্যায়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: হাসিবুল হাসান, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা উম্মে সাবিহা তাসনিম এরিন এবং কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মাহে আলম।
স্কুলগুলোতে ধান,গম,পুষ্টিকর খাবারের উৎস ও বাংলা গ্যাপ বিষয়ক কার্যাবলি শেখানো হয়। বাংলা গ্যাপ মানে হচ্ছে নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই কৃষি পদ্ধতি অনুসরণ করা। এতে করে কৃষকেরা যেমন বাজারে ভালো দামে ফসল বিক্রি করতে পারছেন, তেমনি ভোক্তারা পাচ্ছেন নিরাপদ খাদ্য।
এ বিষয়ে কৃষকরা বলেছেন, এই প্রশিক্ষণের ফলে তারা আগের তুলনায় কম খরচে বেশি ফলন পাচ্ছেন। অনেকে এখন জৈবসার ও বালাইনাশকের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকেরা নিজেরাই এখন অন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এতে এলাকায় টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ সম্ভব হচ্ছে।