এ এইচ সবুজ, গাজীপুর: নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে থেকে গাজীপুরের সদর উপজেলা এলাকার ভোটারদের পাঁচ (৫) বস্তা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে বিপুল সংখ্যক পরিচয়পত্র গুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এসময় বিপুল সংখ্যক পোলিং অফিসারের কার্ড এবং নির্বাচনী সিল উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, গাজীপুরের বিদায়ী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান।
তিনি আরো জানান, এসব কার্ড ২০০৮ সালে ইস্যু করা হয়েছিল। পরে এসব কার্ড ফেরত দিয়ে কার্ডের মালিকগণ স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করেছেন। এসব কার্ড এখন আর কোন কাজের নয়। এগুলো বাতিল বা পরিত্যাক্ত কার্ড।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, গেল রবিবার সন্ধ্যার দিকে একটি সাদা গাড়িতে করে কয়েকজন ব্যক্তি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় স্টেডিয়ামের সামনে এসে দ্রুত বস্তাগুলো ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা বস্তাগুলো দেখে সন্দেহ হলে বস্তাগুলো খুলে ভেতরে প্রচুর এনআইডি কার্ড ও নির্বাচনী সরঞ্জাম দেখতে পায়। পরে তারা পুলিশে খবর দেয়।
এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নাজমুল হাসান বাবু সাংবাদিকদের বলেন, আমি ওই এলাকায় একটি স'মিলে কাজ করি এবং অনেক দিন ধরে এখানে ময়লা না ফেলার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছি। হঠাৎ দেখি সাদা একটি গাড়ি এসে বস্তাগুলো ফেলে যায়। আমার লোকজন গিয়ে দেখে সেখানে এনআইডি কার্ড ও পোলিং অফিসারের কার্ড রয়েছে। পরে পুলিশে খবর দিলে তারা এসে উদ্ধার করে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী বলেন, পাঁচ বস্তা এনআইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত নির্বাচন কমিশনার রাকিবুজ্জামান জানান, উদ্ধার হওয়া কার্ডগুলো আমাদের এখানকার নয়। সব কার্ড গাজীপুর সদর এলাকার। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কার্ডগুলো পুরোনো এবং পরিত্যক্ত। এগুলো স্মার্টকার্ড নয়।
গাজীপুরের বিদায়ী জেলা নির্বাচন অফিসার এ এইচ এম কামরুল হাসান আরো জানান, এনআইডি কার্ডের সাথে থাকা পোলিং অফিসারের কার্ড এবং নির্বাচনী সিলগুলো গত নির্বাচনের সময়ে ব্যবহৃত।
ঘটনাটি জানার পর গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তাগণ সেখানে গিয়েছেন। এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পরিত্যাক্ত নির্বাচনী মালামাল উপজেলা পর্যায়ে একটি কমিটি আছে। সে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে এগুলো ধ্বংস করার জন্য দেয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, যে প্রতিষ্ঠানকে এগুলো ধ্বংস করার জন্য দেয়া হয়েছিল, তাদের অবহেলার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে উদ্ধার হওয়া সব এনআইডি কার্ড এবং নির্বাচনী সরঞ্জাম নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কমিশনের অফিসে রাখা হয়েছে। বিধি অনুযায়ী এগুলো ধ্বংস করা হবে। ঘটনার জন্য কারা দায়ী তা তদন্ত করে নির্বাচন কমিশনর নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।