গিজার এর দাম কত ২০২৪ : আর এফ এল গিজারসহ বাজারে অনেক ধরনের গিজার পাওয়া যায়। সেসব গিজারের বিস্তারিত তথ্য ও দাম নিয়ে এই পোস্ট, পুরো লেখাটা পড়ুন।
গিজার কি?
ইংরেজি Geyser শব্দের আভিধানিক অর্থ হল উষ্ণ প্রস্রবণ। তবে বাংলায়, সহজ ভাষায় গিজার বলতে পানি গরম করার যন্ত্রকে বোঝায়। এটি সাধারনত বাথরুমের পানির লাইনের সাথে সংযুক্ত করা হয় এবং বিদ্যুতের মাধ্যমে চলে। এই যন্ত্রটি একটি বৈদ্যুতিক সুইচের মাধ্যমে অন অফ করা যায়। সুইচ অন করার অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ছোট ট্যাঙ্কিতে থাকা পানি গরম হয়ে যায় এবং কল ছাড়লেই গরম পানি পাওয়া যায়। ট্যাঙ্কির পানি শেষ হলে বাথরুমের পানির লাইন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা আবার ভর্তিও হয়ে যায়। এভাবে এই গেজেটটি মাধ্যমে খুব সহজে সুইচ অন করেই দিনভর গরম পানি ব্যবহার করতে পারবেন।পানি গরম করার জন্য কোন ধরনের গিজার ব্যবহার করবেন?
বাথরুমে ব্যবহারের জন্য কয়েক ধরনের গিজার বাজারে পাওয়া যায়। চলুন এই গিজারের ধরনগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। পানি গরম করার পদ্ধতির উপর নির্ভর করে ৩ ধরের গিজার পাওয়া যায়। যথা-- গ্যাস গিজার
- বৈদ্যুতিক গিজার
- সৌর শক্তি চালিত গিজার
১. গ্যাস গিজার
গ্যাস গিজারে পানি গরম করার জন্য এলপিজি গ্যাস ব্যবহার করা হয়। গ্যাস গিজারগুলোর সাথে সাধারনত বেশ বড় সাইজের পানির ট্যাঙ্ক থাকে। যেহেতু এই ধরনের গিজারগুলোতে পানি গরম করার জন্য গ্যাস ব্যবহার করা হয় তাই এতে বিদ্যুতের ব্যবহার কার্যত শূন্য। এটি বড় পরিবার ও সুপরিসর বাথরুমের জন্য প্রযোজ্য। তবে এটি ব্যবহার করা ঠিক কতটা নিরাপদ তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।২. বৈদ্যুতিক গিজার
বৈদ্যুতিক গিজার আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত গিজার। এতে পানি গরম করার জন্য বিদ্যুত ব্যবহার করা হয় এবং এটি বিদ্যুতের খরচের ব্যাপারেও অনেক সাশ্রয়ী। অন্যান্য পানি গরম করার গিজারের তুলনায় এতে খুব দ্রুত পানি গরম হয় এবং ছোট বাথরুমেও অনায়াসে সেট করা যায়। এটি অনেকটা চট জলদি পানি গরম করার হিটারের মত দ্রুত কাজ করে।৩. সৌর শক্তি চালিত গিজার
সৌর শক্তি চালিত গিজার পানি গরম করা জন্য সৌর শক্তি ব্যবহার করে। পানি গরম করার জন্য এই পদ্ধতিটি সবচেয়ে নিরাপদ ও লাভজনক। সৌর শক্তি ব্যবহার করার কারনে এর জন্য বিদ্যুতের খরচ ৭০% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে। ছোট আকৃতির বাথরুমের জন্য এই গিজারগুলো খুব ভালো। তবে এই গিজার সেট করার জন্য সৌর প্যানেলগুলো এমন জায়গায় স্থাপন করা জরুরী যেখানে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পাওয়া যায়। আমাদের দেশে শীতকালে শৈতপ্রবাহ হলে অথবা ঘন কুয়াশার কারনে একটানা কয়েক দিন রোদের দেখা পাওয়া যায় না। এই কারনে আমাদের দেশে এই গিজার খুব একটা প্রচলিত নয়।পানি গরম করার গিজারের দাম কত?
নানারকম গিজারের বিষয়ে তো জানলাম, এখন নিশ্চয়ই এর দাম সম্পর্কে জানতে ইচ্ছা করছে? চলুন তাহলে পানি গরম করার গিজারের দাম নিয়ে আলোচনা করা যাক। অন্যান্য গ্যাজেটের মত গ্যাজারেরও নানারকম ব্র্যান্ড রয়েছে। এই সব পন্যের মান ও আকারের ভিত্তিতে দামেরও ওঠা নামা রয়েছে। আমাদের দেশে তেমনি প্রচলিত কিছু ব্র্যান্ড হলো Midea, Havells, Walton, Eco+ ইত্যাদি। চাইনিজ Midea ব্র্যান্ডের গিজারগুলো আকার ভেদে (যেমন ৩০ লিটার, ৪০ লিটার বা ৫০ লিটার) ১০,০০০ টাকা থেকে ১৬,০০০ হাজারের মধ্যে পাওয়া যেতে পারে। একইভাবে Havells-এরও আকার ভেদে সাড়ে এগারো হাজার হতে পনেরো হাজারে পাওয়া যাবে। গিজারের বাংলাদেশী কিছু ব্র্যান্ড আছে যা দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যেমনঃ- এরিস্টন– বাংলাদেশী ব্র্যান্ডের মধ্যে এরিস্টন বেশ জনপ্রিয়। এটি মানেও বেশ ভালো। অন্য সব গিজারের মত এরও আকারের ভিত্তিতে দাম নির্ধারন করা হয়েছে। এগুলো ১৩,০০০ থেকে ১৮,০০০ এর মধ্যে পাওয়া যাবে।
- ওয়াল্টন– নানারকম গেজেটের জন্য ওয়াল্টন এখন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কোম্পানী। এই কোম্পানীর গিজারের দাম এবং মান দুটোই ভালো। ৬,৭০০ টাকা থেকে ৩,১০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে ওয়াল্টনের গিজার।
- গাজী– গাজী আমাদের দেশের আরো একটি সুপরিচিত ব্র্যান্ড। বিভিন্ন রকমের ধারন ক্ষমতা ও আকর্ষনীয় ফিচারের জন্য বাজারে গাজীর গিজারের বেশ ভালো একটা চাহিদা রয়েছে। ৮,৭০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৩,৬০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের গিজার পাওয়া যাবে।
- আরএফএল– আরএফএল সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না। আরএফএল-এর পন্য মানেই বিশেষ এক আস্থার যায়গা। আরএফএল-এর গিজার টেকসই ও নিরাপত্তা জনিত কারনে বেশ জনপ্রিয়। ধারন ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে ৩২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৬,০০০ টাকার মধ্যে আরএফএল-এর গিজার পাওয়া যাবে।
- ভিশন– ধীরে ধীরে ভিশন ইলেক্ট্রনিক্সের বাজারে নিজের যায়গা করে নিতে শুরু করেছে। এদের তৈরি গিজারও এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ৮,২০০ টাকা থেকে ৯,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে ভিশনের গিজার।