ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট কে এই মাসুদ পেজেশকিয়ান
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন দেশটির মধ্যমপন্থী নেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাবেক পারমাণবিক আলোচক সাইদ জালিলিকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান।
ভোট গণনার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মাসুদ পেয়েছেন ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে জালিলি পেয়েছেন ৪৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট। জয় যখন অনেকটাই নিশ্চিত, তখন থেকেই মাসুদ পেজেশকিয়ানের সমর্থকরা ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে নেমে আসে এবং উল্লাস শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, মাসুদের সমর্থকরা ইরানজুড়ে বিভিন্ন রাস্তায় নেচে উদযাপন করছেন।
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট কে?
৬৯ বছর বয়সী মাসুদ একজন হার্ট সার্জারি বিশেষজ্ঞ। তিনি তাবরিজ ইউনিভার্সিটি অব মেডিক্যাল সায়েন্সসের প্রধান হিসবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। মাসুদের জন্ম ১৯৫৪ সালে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাহাবাদ শহরে। তার বাবা জাতিগতভাবে একজন আজারবাইজানি এবং মা কুর্দিশ। তিনি আজেরি ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং চার বছর স্বাস্থ্য মন্ত্রী ছিলেন।
তিনি একগুঁয়ে স্বভাবের জন্য পরিচিত, তিনি ইরানের রাজনৈতিক পরিবেশ এবং দুর্নীতির প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন অনেকবার। ২০২২ সালে পুলিশের হেফাজতে মাশা আমিনির মৃত্যুর বিষয়ে ইরান সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। ১৯৯৪ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় মাসুদ পেজেশকিয়ান তার স্ত্রী ফাতেমা মাজেদি এবং এক কন্যাকে হারান। তবে এরপর আর কখনো বিয়ে করেননি তিনি।
একাই তার দুই ছেলে ও আরেক মেয়েকে বড় করেন। ইরানের রাজনীতে মাসুদের প্রবেশ ঘটে উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে। তিনি সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামির প্রশাসনের অধীনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পান। ২০০৬ সালে তিনি পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন এবং পরবর্তীতে ডেপুটি পার্লামেন্ট স্পিকারের দায়িত্বও পালন করেন। পশ্চিমাদের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত মাসুদ। ২০১১ সালেও তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু পরে প্রার্থীতা তুলে নিয়েছিলেন। আর এবার জয় দিয়েই তাক লাগিয়ে দিলেন প্রতিপক্ষকে।