শিক্ষককে চড় মারল ছাত্র : পাঠানো হলো সংশোধনাগারে
চুয়াডাঙ্গায় শিক্ষককে চড় মারল ছাত্র। চুয়াডাঙ্গার ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভি জে) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসির নির্বাচনি পরীক্ষা চলাকালে ক্লাসের ভেতর এক পরীক্ষার্থী শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মেরেছে, এমন সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ ফেসবুক-ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়েছে।
শিক্ষক লাঞ্ছিতের এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্র আদালতে আত্নসমর্পণ করলে ১০ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
শিক্ষককে চড় মারল ছাত্র : যা বললেন প্রধান শিক্ষক
জানা গেছে, পরীক্ষার হলে বিশৃঙ্খলা ও অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে দশম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল আমিন শীর্ষ নামে এক ছাত্রের খাতা কেড়ে নেন ওই শিক্ষক। এ নিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেয় ছাত্র। একপর্যায়ে শিক্ষক হাফিজুরকে চড়–থাপ্পড় মারে সাইফুল। এ ঘটনায় শিক্ষকদের পক্ষে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সফিয়ার রহমান।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) মো. হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ের ১১২নং কক্ষে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নির্বাচনি পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরীক্ষা চলাকালীন প্রভাতী শাখার দশম শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী মো. সাইফুল আমিন শীর্ষ অসদুপায় অবলম্বন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ সময় দায়িত্বরত শিক্ষক বাধা দেওয়ায় শিক্ষার্থী সাইফুল আমিন শিক্ষককে মারধর করে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সফিয়ার রহমান বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষকের বক্তব্য এবং সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষা চলাকালীন ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষার নিয়মকানুন যথাযথভাবে মানছিল না। যে কারণে শিক্ষক তার খাতাটি নিয়ে নেন এবং বসতে বলেন। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী শিক্ষকের ওপর চড়াও হয় এবং একপর্যায়ে চড়–থাপ্পড় মারে।
থানায় অভিযোগ
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সভাপতি চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসকের পরামর্শে আমরা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর আমরা অভিযোগ দিয়েছি।’
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মাহবুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেখানে এক শিক্ষককে মারধরের কথা বলা হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী শিক্ষক কোনো অভিযোগ দেননি। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, ‘শিক্ষককে মারধর খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা) প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সংশোধনাগারে
শিক্ষককে চড় মারার ঘটনার পর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১০ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ দুপুরে জামিন আবেদন করে আদালতে আত্নসমর্পণ করেন। বিচারক উভয় পক্ষের শুনানি শেষে সরকারি কর্মচারীকে তার কর্তব্য পালনে বাধা প্রদানের দায়ে দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারায় অপরাধ করায় জামিন নামঞ্জুর করেন। তাকে যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মঙ্গলবার বিকালে তাকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় পুলিশ প্রহরায় তাকে যশোরে নেয়া হবে।