ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স-মাস্টার্স করেছেন মাসুম আহমেদ। তিনি ৪৩তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাঁর ভাইভা অভিজ্ঞতা শুনেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
ভাইভা বোর্ডের রুমে প্রবেশের আগে অনুমতি নিলাম। একটু সামনে গিয়ে সালাম দিলাম। স্যার বসতে বললেন। ধন্যবাদ জানিয়ে বসলাম।
চেয়ারম্যান : এখন কী করছেন?
আমি : স্যার, বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডে সহকারী পরিচালক হিসেবে চাকরি করছি।
বিদ্যুতের বর্তমান অবস্থা কী?
—লোডশেডিংয়ের সমস্যা হচ্ছে, স্যার।
Difference between electricity production & demand?
(আমি বিস্তারিত বললাম।)
আমাদের বিদ্যুত্ উত্পাদন এত বেশি! তাহলে লোডশেডিং হচ্ছে কেন?
—(Resource crisis-এর কথা না বলে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিলাম) Over produced electricity store করার কোনো প্রযুক্তি নেই। তাই বিদ্যুতের অপচয় যাতে না হয় এ জন্য আমরা চাহিদার চেয়ে কম বিদ্যুত্ উত্পাদন করি।
ক্যাপাসিটি চার্জ কী?
—স্যার, বিদ্যুেকন্দ্রগুলো উত্পাদন না করেও চুক্তি অনুযায়ী যে চার্জ নেয়, সেটিই ক্যাপাসিটি চার্জ।
এটি কি যৌক্তিক?
—(আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বললাম) স্যার, এটি অবশ্যই যৌক্তিক। আমাদের ২০৩০ সালে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
এক্সটার্নাল-১ : What’s our present per capita income? & what was in 1971?
(per capita income বললাম, তবে ১৯৭১-এর per capita income ভুল বলায় স্যার ধরিয়ে দিলেন।)
এক্সটার্নাল-২ : আপনি ভালো একটি প্রতিষ্ঠানে আছেন, ঢাকায় স্থায়ী পোস্টিং। শিক্ষা ক্যাডার পেলে আসবেন?
—অবশ্যই স্যার, আমি যোগ দেব।
শিক্ষা ক্যাডারে কেন যোগ দেবেন?
—স্যার, শিক্ষা প্রশাসনে কাজ করার সুযোগ পাব। তরুণ প্রজন্মকে প্রেরণা দেওয়ার সুযোগ পাব। তাদের দেশপ্রেমিক ও আমাদের জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পারব।
জাতীয় চেতনা কী?
—সংবিধানের ‘অনুচ্ছেদ ৯’-এ জাতীয়তাবাদ, ‘অনুচ্ছেদ ১০’-এ সমাজতন্ত্র, ‘অনুচ্ছেদ ১১’-এ গণতন্ত্র এবং ‘অনুচ্ছেদ ১২’-এ ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। এগুলোই আমাদের জাতীয় চেতনা।
সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের কথা সংবিধানে বলা আছে। এই দুটি তো স্বতন্ত্র আইডিওলজি। একসঙ্গে দুটি চেতনার বাস্তবায়ন কিভাবে সম্ভব?
—সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি দিয়ে শোষণহীন-বৈষম্যহীন সমাজ এবং রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক নীতির চর্চা—এই দুটি বিষয় একত্রে বাস্তবায়ন সম্ভব।
ধর্মনিরপেক্ষতা কী?
(সংবিধানের ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ পুরোটা বললাম।)
চেয়ারম্যান : বাংলাদেশ কি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র?
—জি স্যার।
তাহলে আপনার কথা আমাদের সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না?
(আমি দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ ব্যাখ্যা করলাম।)
এক্সটার্নাল-২ : বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডে আপনি কী কাজ করেন?
—নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি অনুমোদন—এসব নিয়ে কাজ করি।
ন্যাশনাল ইনটেগ্রিটি স্ট্র্যাটেজি কী?
—ন্যাশনাল ইনটেগ্রিটি স্ট্র্যাটেজি বা জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল হলো দুর্নীতি ঠেকাতে নাগরিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বছতা, জবাবদিহি এবং সততা নিশ্চিতকরণে সরকার প্রণীত একটি ‘সুশাসন কৌশল’।
চেয়ারম্যান : What is the different between honesty & integrity?
—স্যার, Integrity is more than honesty.
ঠিক আছে, আপনি আসেন।
(কাগজপত্রগুলো নিয়ে সবাইকে ধন্যবাদ ও সালাম দিয়ে বের হয়ে এলাম।)
সূত্র: কালের কণ্ঠ