ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেদার প্রডাক্টস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি করেছেন মো. শরীফুল ইসলাম। তিনি ৪৩তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাঁর ভাইভা অভিজ্ঞতা শুনেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
৪৩তম বিসিএসের ভাইভা হয়েছিল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। ভাইভা বোর্ডে ছিলাম আনুমানিক ১৫ মিনিটের মতো।
আমি : আসতে পারি, স্যার?
চেয়ারম্যান : আসুন, আপনি শরীফুল ইসলাম?
আমি : জি স্যার। (চেয়ারম্যান স্যার বসতে বললেন। ব্লেজারের বোতাম খুলে বসলাম)।
চেয়ারম্যান : আপনি চাকরি করেন কোথাও?
আমি : জি স্যার। আমি কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত আছি।
চেয়ারম্যান : ইপিজেড কী? বাংলাদেশে বর্তমানে ইপিজেড কয়টি?
আমি : এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন। ৮টি।
চেয়ারম্যান : বেপজা কী?
আমি : বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন অথরিটি।
চেয়ারম্যান : বাংলাদেশে ইকোনমিক জোন কয়টি?
আমি : সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি ইকোনমিক জোন স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ৮৮টির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
চেয়ারম্যান : সবচেয়ে বড় ইকোনমিক জোন কোনটি?
আমি : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্পনগর।
চেয়ারম্যান : আপনার প্রথম পছন্দ অ্যাডমিন ক্যাডার। তাহলে অ্যাডমিন সম্কর্কে জিজ্ঞেস করি। জেলা প্রশাসকের কাজ কী?
আমি : জেলা প্রশাসক ডেপুটি কমিশনার হিসেবে জেলায় সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কিছু বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন আবার ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর হিসেবে জেলার রাজস্ব আহরণ করেন। তিনি জেলায় কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের কাজের মধ্যে সমন্বয় করেন।
চেয়ারম্যান : জেলা প্রশাসক কী ধরনের রাজস্ব আহরণ করেন?
আমি : জেলা প্রশাসক ভূমিসংক্রান্ত রাজস্ব আহরণ করেন। খাসজমি, জলমহাল ইত্যাদি ইজারা দিয়ে থাকেন।
(চেয়ারম্যান স্যার এরপর ভূমি থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের পরিমাণ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন করেন, আমিও গুছিয়ে উত্তর দিই)।
এক্সটার্নাল-১ : আপনি ফরেন ক্যাডার পছন্দ দেননি কেন?
আমি : স্যার, আমি দেশেই থাকতে চাই…।
এক্সটার্নাল-১ : বলুন তো জাতিসংঘের অফিশিয়াল ভাষা কয়টি ও কী কী?
আমি : স্যার, ছয়টি। চাইনিজ, রুশ, ফ্রেঞ্চ, স্ক্যানিশ, আরবি (ভুলে ইংরেজি বলিনি)।
এক্সটার্নাল-১ : আপনার পছন্দক্রমে কাস্টমস আছে দেখছি, এটা কেন পছন্দ তালিকায় দিলেন?
আমি : স্যার, বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য বিশাল এবং ক্রমবর্ধমান। আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য থেকে সরকার প্রচুর পরিমাণ অর্থ আয় করে থাকে। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের প্রয়োজন। তাই সুযোগ পেলে আমি কাস্টমস ক্যাডারে কাজ করতে চাই।
এক্সটার্নাল-২ : চট্টগ্রাম অঞ্চলের কয়েকটি মেগাপ্রকল্পের নাম বলুন।
আমি : স্যার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্পনগর, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্ক্রসারণ প্রকল্প ইত্যাদি।
এক্সটার্নাল-২ : মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর কেন দরকার?
আমি : বর্তমানে আমাদের প্রধান বন্দর চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম বন্দরে ১২ মিটারের বেশি (প্রকৃতপক্ষে ১০ মিটার) গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারে না। এতে আমদানি-রপ্তানিতে সময় ও অর্থ বেশি ব্যয় হয়…।
এক্সটার্নাল-২ : ব্লু-ইকোনমি সম্কর্কে কী জানেন?
আমি : সমুদ্র সম্কদকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ব্লু-ইকোনমি বলে।
এক্সটার্নাল-২ : বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ব্লু-ইকোনমির সম্ভাবনা কেমন?
আমি : বঙ্গোপসাগর থেকে আমরা বার্ষিক ছয় লাখ টন মাছ পাই। বঙ্গোপসাগরে ৪০ টিসিএফ গ্যাস মজুদ রয়েছে। যদি আমরা এ গ্যাস উত্তোলন করতে পারি, তাহলে এটি আমাদের ক্রমবর্ধমান গ্যাস চাহিদা পূরণে অবদান রাখবে।
চেয়ারম্যান : ওকে। আপনি আসতে পারেন। আপনার কাগজপত্র নিন।
সূত্র: কালের কণ্ঠ