প্রাচীন ধান-মাছ মিশ্র চাষে প্রাণ ফিরে পেল ছিংথিয়ানের পাহাড়ি সোপান

প্রাচীন ধান-মাছ মিশ্র চাষে প্রাণ ফিরে পেল ছিংথিয়ানের পাহাড়ি সোপান
ডিসেম্বর ১২, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: চীনের চাষি সু কুয়ানহোংয়ের ধান ও মাছের প্যাকেট খুললেই চোখে পড়ে নানা রকম চিহ্ন আর কিউআর কোড। তার মাঝে সবচেয়ে মূল্যবান হলো ‘ভূগোল নির্দেশক’ লেবেল—যা জানিয়ে দেয়, ছিংথিয়ান কাউন্টির সহস্রাব্দ-প্রাচীন ধান ও মাছের সমন্বিত পদ্ধতির আসল স্বাদ রয়েছে এই পণ্যে। চেচিয়াং প্রদেশের ছিংথিয়ানের পাহাড়ি সিঁড়ি-জমিতে যুগ যুগ ধরে পাশাপাশি বেড়ে ওঠে মাছ আর ধান। মাছ পোকামাকড় খেয়ে জমিকে উর্বর রাখে, আর ধানের পাতায় তারা পায় ছায়া ও নিরাপদ আশ্রয়। এই সম্পর্ক শুধু কৃষির নয়—এটি মানুষের জীবনগাথারও অংশ। বিদেশে বহু বছর কাটানো সাবেক পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক সু বলেন, ‘ধানখেতে বড় হওয়া মাছের কোমল স্বাদ আমাকে সবসময় গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এটা চাষের পদ্ধতি নয়, আমার শিকড়।’ ২০০৫ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এই পদ্ধতিকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ কৃষি ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়। খবরটি শুনে ২০০৬ সালে ফ্রান্স থেকে ফিরে আসেন সু, ২০১১ সালে গড়ে তোলেন নিজের সমন্বিত ইকোলজিক্যাল খামার। শুরুর তিন বছর ক্ষতি গুনলেও বড় আকারের মাছের পোনা ব্যবহার করে সু পাল্টে দেন সমীকরণ। ছোট পোনা ধানক্ষেতের পরিবেশে নাজুক; বড় পোনা ভালো মানিয়ে নেয়, পোকা-মাকড় খেয়ে জমি পরিষ্কার রাখে, আর দ্রুত বাজারজাতও করা যায়। এখন সু তার এক মু জমিতে বছরে ৩৫০ কেজি ধান আর ১৫০ কেজি মাছ চাষ করেন। আয় হয় ১৭ হাজার ইউয়ানের বেশি। ৫০ মু থেকে তার ফার্ম এখন ৩০০ মু। কোনো চাষ, কীটনাশক বা সার ছাড়াই উচ্চফলনশীল পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে চাষ করে যাচ্ছেন তিনি। জিআই স্বীকৃতি পেয়ে তার ধান–মাছের মর্যাদা আরও বেড়েছে। ‘এটা একটা সোনালি পরিচয়পত্র’ বলেন সু। এই স্বীকৃতি ও অর্গানিক সার্টিফিকেশন মিলিয়ে তার ধান এখন কেজিপ্রতি ২০ ইউয়ানেও বিক্রি হয়। ২০২৪ সালে ছিংথিয়ানে এই সমন্বিত পদ্ধতির আওতায় এসেছে ৭০ হাজার মু জমি, উৎপাদন মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩৪ কোটি ইউয়ান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাবেক কৃষি কমিশনার দাচিয়ান সিওলোস বলেন, এই সমন্বিত পদ্ধতি শুধু ঐতিহ্য নয়, পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যে ব্যবস্থা টিকে আছে, আজকের পরিবেশবান্ধব কৃষির আদর্শ হিসেবে তা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। ফয়সল/জেনিফার তথ্য ও ছবি: চায়না ডেইলি

Rate This Article

How would you rate this article?

ED Desk

ED Desk

Staff Reporter

Experience in write about 5 years.

Our Editorial Standards

We are committed to providing accurate, well-researched, and trustworthy content.

Fact-Checked

This article has been thoroughly fact-checked by our editorial team.

Expert Review

Reviewed by subject matter experts for accuracy and completeness.

Regularly Updated

We regularly update our content to ensure it remains current.

Unbiased Coverage

We strive to present balanced information.