ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে বিনামূল্যে কোরআন বিতরণ করেছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে তারা এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে। গত ৪ অক্টোবর (রবিবার) নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল ইসলাম ধর্মের পবিত্র কোরআন শরিফ মাটিতে ফেলে পদদলিত করেছে৷ সেই ভিডিওটি সে তার নিজ ফেসবুক প্রোফাইলে আপলোড করে। সেই ভিডিওটি মুহূর্তেই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু, ইসলাম ধর্মের পবিত্র কিতাবকে এভাবে অবমাননা করা হয়েছে; তাই স্বাভাবিকভাবেই দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বহু মানুষ তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশের পাশাপাশি তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জন্যে বিক্ষোভ মিছিল পর্যন্ত করা হয়েছে।
একটি ইসলামি রাষ্ট্রে এমন আপত্তিকর কর্মকাণ্ড প্রত্যেক মুসলিম ও ধর্মপ্রাণ মানুষের হৃদয়ে দাগ কাটতে বাধ্য হয়। তাই গত ৯ অক্টোবর ইসলাম বিদ্বেষীদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কোরআনের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যতিক্রম একটি উদ্যোগ নিয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুরো ক্যাম্পাসে বিনামূল্যে পবিত্র কোরআন শরিফ বিতরণ করেছেন শিক্ষার্থীদের ও শিক্ষকদের মাঝে। বিতরণের কার্যক্রম দুপুর ১২ টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, দৈবাৎ বৃষ্টির কারণে খানকিটা বিলম্ব হয়। পরবর্তীতে, কার্যক্রম শুরু হয় দুপুর পৌনে একটায়। কিন্তু, অবাক করার মতো বিষয় হলো—পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে ৩৫০টি কোরআন শরিফ বিতরণ সম্পন্ন হয় কেবল তিন মিনিটের মধ্যেই! যার মধ্যে ৩০০টি বিতরণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এবং বাকি ৫০ টি বিতরণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দের মাঝে। শিক্ষার্থীদের মতে, এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়ার মূল উদ্দ্যেশ হলো, ইসলাম বিদ্বেষীদের বার্তা দেওয়া হয়েছে—কোনোরকমের সহিংসতায় না জড়িয়েও শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মের প্রচার ও একইভাবে শ্রদ্ধা জানানো যায়। তারা জানান, এটি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নীরব প্রতিবাদ। তাদের বিশ্বাস, এমন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদই সমাজে বিশাল পরিবর্তনের বার্তা পৌঁছে দিতে পারে৷
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের এই ব্যতিক্রম উদ্যোগ প্রমাণ করে যে, সহিংসতা ছাড়াই ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করা সম্ভব। কারণ, ভালোবাসা, শান্তি এবং সম্মানের মাধ্যমে ধর্মের সাথে নৈতিকতার মূল্য বজায় রাখা যায়। এরকম ব্যতিক্রম ও মানবিক পদক্ষেপগুলোই তরুণ প্রজন্মকে ধর্মীয় মূল্যবোধের দিকে উদ্বুদ্ধ করবে এবং শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসার মাধ্যমে সমাজের শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে অনুপ্রাণিত হবে।
সামিন ইয়াসার, শিক্ষার্থী, বিবিএ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি