এ এইচ সবুজ,গাজীপুর: বিকাশ অ্যাকাউন্টে ভুল করে আসা ৪১ হাজার ৯৯০ টাকা ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন নার্সিং কলেজের পোস্ট বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান মনির (৩০)।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে সৌদি আরব প্রবাসী মো: আব্দুর রহিমের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে স্ত্রী ও ছেলে মো: পারভেজ মিয়ার (২৫) হাতে টাকা বুঝিয়ে দেন তিনি।
প্রকৃত মালিকের কাছে টাকা ফেরত দেওয়ায় কাপাসিয়া উপজেলা, নিজ এলাকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়ে নেটিজেনদের প্রশংসায় ভাসছেন শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান মনির।
আসাদুজ্জামান মনির কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের সাবেক বিডিআর সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আফসার উদ্দিনের ছেলে ও কাপাসিয়ার সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন নার্সিং কলেজের পোস্ট বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, সোমবার (৬ অক্টোবর) রাতে আসাদুজ্জামান মনিরের ব্যক্তিগত বিকাশ একাউন্টে হঠাৎ একটি নম্বর থেকে ৪১ হাজার ৯৯০ টাকা আসে। টাকা পেয়ে অবাক হন মনির।
রাতেই টাকা আসা এজেন্ট নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। বিকাশ এজেন্টের ব্যক্তি জানান, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকাগুলো টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর দক্ষিণ ছন্দাপাড়া এলাকার আব্দুর রহিম মিয়ার স্ত্রীর মোবাইল নাম্বারে পাঠাতে গিয়ে ভুলে মনিরের নাম্বারে চলে গেছে।
পরে একাধিক ব্যক্তির মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপ থেকে তার নাম্বারে ফোন ও মেসেজ আসে। এতে করে তিনি অবাক হয়ে যান। কোনভাবেই টাকার প্রকৃত মালিককে শনাক্ত করতে পারতেছিলেন না। একপর্যায়ে যে এজেন্ট নাম্বার থেকে টাকা তার সাথে যোগাযোগ করে প্রকৃত মালিকের সন্ধান পান মনির।
এরপর সঠিক তথ্য প্রমাণ দিয়ে শনিবার সকালে কামারগাঁও নামা বাজারের জামাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের ভেতরে বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে টাকার মালিক সৌদি প্রবাসী আব্দুর রহিমের চাচা, স্ত্রী ও ছেলের হাতে টাকা বুঝিয়ে দেন।
টাকা পেয়ে প্রবাসী আব্দুর রহিমের ছেলে মো: পারভেজ মিয়া বলেন, আজকাল মুঠোফোনে ভুলক্রমে ২০ টাকা রিচার্জ হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই টাকা ফেরত পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। সেখানে একজন ছাত্র প্রায় ৪২ হাজার টাকা পেয়েও ফেরত দিয়ে সততার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান মনির বলেন, সততার কাছে টাকা মূল্যহীন। তবে টাকার প্রকৃত মালিককে খোঁজে বের করতে একটু বেগ পেতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রায় ৪২ হাজার টাকা কোনো বিষয় না, লাখ টাকা হলেও ফেরত দিয়ে দিতাম। কারণ এই টাকার মালিক আমি নই। আমার কর্তব্য ও দায়িত্ব ছিলো প্রকৃত মালিককে টাকা ফেরত দেয়া।