ভাইভা বোর্ডের মুখোমুখি

ভাইভা প্রশ্ন : কী দেখে আপনি পুলিশ হতে চান?

Content Freshness & Accuracy

Verified
Published Aug 7, 2025
Updated Sep 21, 2025
Next Review Mar 22, 2026

Our Freshness Pledge

We commit to regularly reviewing and updating our content to ensure it remains accurate, relevant, and trustworthy.

Learn About Our Review Process
ভাইভা প্রশ্ন : কী দেখে আপনি পুলিশ হতে চান?
সালাহ্উদ্দিন কাদের পড়াশোনা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগে। তিনি ৪৩তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাঁর ভাইভা অভিজ্ঞতা শুনেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন ৪৩তম বিসিএসে আমি অনার্স অ্যাপিয়ার্ড প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেছিলাম। ভাইভা হয়েছিল ৬ নভেম্বর ২০২৩। ভাইভা বোর্ডে ছিলাম ১৭-১৮ মিনিটের মতো। আমার সিরিয়াল ছিল শেষের দিক থেকে দ্বিতীয়। ভাইভা দিয়ে কেউ বের হলেই তাঁকে বোর্ড কী কী জিজ্ঞেস করেছে, পেরেছেন কি না জানতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু কেউই ভাইভা দিয়ে সন্তুষ্ট নন। কলিংবেল বাজার পর আস্তে করে দরজা খুলে ‘স্যার, আমি কি আসতে পারি?’ বলে অনুমতি চাইলাম। চেয়ারম্যান : জি, আসুন। বসুন। আমি : (চেয়ারের কাছে এগিয়ে গিয়ে) আসসালামু আলাইকুম, স্যার। চেয়ারম্যান : ওয়া আলাইকুমুস সালাম। (ডকুমেন্টসের ওপর আমার নাম পড়ে এক্সটার্নাল-১ নাম সম্পর্কিত প্রশ্ন করেন, আমি যথাযথ উত্তর দিই।) চেয়ারম্যান : আপনি চয়েস লিস্টে পুলিশ ক্যাডার প্রথমে দিয়েছেন, শিক্ষা ক্যাডার শেষে দিয়েছেন। কেন? কারণটা ব্যাখ্যা করুন। আমি : স্যার, পুলিশ ক্যাডার প্রথমে দিয়েছি। কারণ এটা আমার চাইল্ডহুড ড্রিম। চেয়ারম্যান : চাইল্ডহুড ড্রিম? আচ্ছা, কখন থেকে আপনি পুলিশ হতে চাচ্ছিলেন? এক্সটার্নাল যোগ করলেন, আপনি তখন কোন ক্লাসে পড়তেন? আমি : স্যার, আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়তাম। চেয়ারম্যান : ও আচ্ছা। তাহলে বলুন, ঠিক কী দেখে আপনি পুলিশ হতে চাইছিলেন? আমি : স্যার, আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা প্রত্যন্ত দ্বীপ মহেশখালীতে। এটি একসময় বাংলাদেশের অন্যতম অপরাধপ্রবণ অঞ্চল ছিল। তখন প্রায়ই দেখতাম, অপরাধ দমন ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সদস্যরা অনেক সিনসিয়ারলি কাজ করতেন। তদন্তের কাজে পুলিশ কর্মকর্তারা আমাদের গ্রামে এলে তাঁরা যে সম্মানটা পেতেন, সেটা আমাকে অনেক আকৃষ্ট করত। পাশাপাশি পুলিশের ইউনিফর্মের প্রতিও আমার তীব্র আকর্ষণ কাজ করত, স্যার। (আমি ইচ্ছা করেই মহেশখালীকে টেনে আনলাম, যাতে পরবর্তী প্রশ্ন মহেশখালীর উন্নয়নযজ্ঞ থেকেই করা হয়, কিন্তু তাঁরা টোপটা গিললেন না।) চেয়ারম্যান : ভালো। তাহলে শিক্ষকরা সম্মান পান না। তাই আপনি শিক্ষকতাকে সবার শেষে রেখেছেন? আমি : মোটেও সে রকম না, স্যার। শিক্ষকরা সমাজের আইকন। তাঁরা সবার কাছে শ্রদ্ধার পাত্র। কিন্তু স্যার, শিক্ষা ক্যাডারের প্রমোশন স্লো, মন্ত্রণালয়ে সহজে পোস্টিং পাওয়া যায় না। ফলে প্রশাসনিক লেভেলে কাজ করার সুযোগ খুব একটা হয় না, স্যার। চেয়ারম্যান : তা ঠিক আছে। এটাই বাস্তবতা। আচ্ছা ধরুন, আপনি ৪৩তম বিসিএসে অ্যাডমিন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হলেন, ৫৩তম বিসিএসেও কি একই পরিস্থিতি দেখতে চান? (আমি প্রশ্নটা ঠিক বুঝিনি। ম্যাম আবার রিপিট করলেন।) আমি : স্যার, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সুযোগ পেলে আমি শিক্ষা ক্যাডারের পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করব। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের প্রশাসনিক পদগুলোতে যাতে শিক্ষকরাই পদায়িত হন, তাঁদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পায়, সেই লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালাব, স্যার। (চেয়ারম্যান ম্যাম নিজেই ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। বাকি দুজনের একজন জাবির ভূগোল বিভাগের শিক্ষক। তাই এই উত্তরে বোর্ডকে সন্তুষ্ট মনে হলো। তাঁরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়লেন। এতে আমার মাঝে আরো কনফিডেন্স বেড়ে গেল।) এক্সটার্নাল-১ : আচ্ছা বলুন তো বাংলাদেশ পুলিশ কোন আইন অনুসারে পরিচালিত হয়? আমি : স্যার, পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল (পিআরবি) ১৯৪৩ অনুসারে। এক্সটার্নাল-১ : ১৯৪৩, নাকি ১৮৬১? আমি : স্যার, ১৮৬১ সালে দ্য ইন্ডিয়ান পুলিশ অ্যাক্ট অনুসারে উপমহাদেশে পুলিশ বাহিনী গঠিত হয়েছিল। (স্যার তবু উত্তরটা নিলেন না মনে হলো) এক্সটার্নাল-২ : আমাদের যে অ্যাটমস্ফিয়ার, এর তো কিছু পার্ট আছে, স্তর আছে, সেগুলোর সিরিয়ালি নাম বলুন। আমি : স্যার, আমাদের বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তর ট্রপোস্ফিয়ার, এরপর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার, মেসোস্ফিয়ার, আয়নোস্ফিয়ার ও এক্সোস্ফিয়ার। এক্সটার্নাল-২ : ওজোনমণ্ডল কোন স্তরে থাকে? আমি : স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে, স্যার। এক্সটার্নাল-২ : ওজোনের সংকেত কী? ওজোন কেন গুরুত্বপূর্ণ? আমি : স্যার, ওজোনের সংকেত ওথ্রি, সূর্য থেকে যে অতিবেগুনি রশ্মি নির্গত হয়, সেগুলো ওজোনস্তরে এসে বাধা পায়। ওজোনস্তর না থাকলে অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে চলে আসবে। ফলে গ্রিনহাউস এফেক্টের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঘটবে এবং ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হতে পারে। এক্সটার্নাল-২ : গ্রিনহাউস গ্যাসগুলোর নাম বলুন। আমি : গ্রিনহাউস গ্যাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মিথেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, জলীয়বাষ্প ইত্যাদি। এক্সটার্নাল-২ : আকাশ থেকে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো ওপরে না গিয়ে নিচে কেন নেমে আসে? আমি : স্যার, গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স বা মাধ্যাকর্ষণ বলের কারণে। এক্সটার্নাল-২ : গুড। তো এরপর পানিগুলো যে মাটিতে ঢুকে যায়, সেটাকে ইংরেজিতে কী বলে? (টার্মটা ঠিক মনে করতে পারছিলাম না। স্যার আবার বললেন, আমরা তো বৃষ্টির পানি সরাসরি খাই না। সেটা মাটিতে ঢুকে যায়। এরপর আমরা উত্তোলন করি। এই যে মাটির ভেতরে ঢুকে যাওয়া, এটাকে কী বলে?) আমি : স্যার, টার্মটা মনে পড়ছে না। সম্ভবত সেডিমেন্টেশন। (সেডিমেন্টেশন অর্থ তলানি পড়া বা অধঃক্ষেপণ, কিন্তু সঠিক উত্তর হবে ইনফিলট্র্যাশন।) এক্সটার্নাল-২ : সেডিমেন্টেশন? আমি : স্যরি, স্যার। এক্সটার্নাল-২ : মাটি থেকে আমরা পানি উত্তোলন করি, এই পানিগুলো কোন স্তরে থাকে? আমি : লিথোস্ফিয়ারে, স্যার। এক্সটার্নাল-২ : লিথোস মানে কী? আমি : রক। এক্সটার্নাল-২ : একুইফার কী? আমি : স্যার, একুইফার হলো জলাধার। ভূপৃষ্ঠে কিংবা ভূগর্ভে অনেক একুইফার আছে। এক্সটার্নাল-১ : ধরুন, আপনাকে পুলিশ হিসেবে যেখানে পদায়ন করা হলো, সেখানে আপনি একজন আসামি গ্রেপ্তার করলেন, কিন্তু এলাকার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এসে আপনাকে জোর করছেন আসামিকে ছেড়ে দিতে। তখন আপনি কী করবেন? আমি : স্যার, ব্যাপারটা যে বেআইনি এবং একজন অপরাধীকে এভাবে ছেড়ে দিতে আমি যে অপারগ, তা বুঝিয়ে বলব। তবু তিনি জোর করলে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বিষয়টা অবহিত করব। এক্সটার্নাল-১ : গুড। আচ্ছা, এবার আপনাকে ভিন্ন কিছু জিজ্ঞেস করি। কোনো এক সাহিত্যিকের কয়েকটা গ্রন্থের নাম বলে যেতে লাগলেন। আমি এগুলোর একটাও কখনো পড়িনি, শুনিনি। আমি স্যরি বলায় তিনি হতাশ হয়ে বললেন, আপনি এগুলোর একটার নামও শুনেননি? আচ্ছা, দুরবিন কী? আমি : স্যার, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। (আন্দাজে) এক্সটার্নাল-১ : (হেসে) আপনি শিউর? আচ্ছা, আপনি পাঠ্য বইয়ের বাইরে কার কার বই পড়েছেন? আমি : স্যার, আমি কাজী নজরুলের ‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাসটা পড়েছি। তাঁর কবিতা পড়েছি। রবীন্দ্রনাথ, শরত্চন্দ্রের উপন্যাস ও ছোটগল্প পড়েছি। এক্সটার্নাল-১ : আর? আমি : হুমায়ূন আহমেদের লেখা ভালো লাগে। এক্সটার্নাল-১ : তাঁর কোন বইটা পড়েছেন? আমি : ‘দেয়াল’ উপন্যাসটা পড়েছি, স্যার। এক্সটার্নাল-১ : এটা কিসের ভিত্তিতে লেখা? আমি : স্যার, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে লেখা। এক্সটার্নাল-১ : এটির শেষ কিভাবে হয়েছে? কোন সময় পর্যন্ত বর্ণনা আছে? আমি : স্যার, পঁচাত্তরের নৃশংস হত্যাকাণ্ড, অভ্যুত্থান, পাল্টা-অভ্যুত্থান, জিয়াউর রহমানের শাসনামল ও তাঁর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনার মধ্য দিয়ে উপন্যসটি শেষ হয়েছে। এক্সটার্নাল-১ : মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কয়েকটা চলচ্চিত্রের নাম বলুন তো। আমি : ‘ওরা ১১ জন’, ‘গেরিলা’... এক্সটার্নাল-১ : হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বেশ কিছু উপন্যাস ও চলচ্চিত্র আছে। সেগুলোর নাম বলুন। আমি : স্যরি, স্যার। চেয়ারম্যান : ঠিক আছে, আপনার কাগজপত্র নিয়ে যান। সূত্র: কালের কণ্ঠ
Edu Daily 24

Edu Daily 24

Senior Writer

Expert in ভাইভা বোর্ডের মুখোমুখি

Experienced writer with deep knowledge in ভাইভা বোর্ডের মুখোমুখি.

Our Editorial Standards

We are committed to providing accurate, well-researched, and trustworthy content.

Fact-Checked

This article has been thoroughly fact-checked by our editorial team.

Expert Review

Reviewed by subject matter experts for accuracy and completeness.

Regularly Updated

We regularly update our content to ensure it remains current and relevant.

Unbiased Coverage

We strive to present balanced and unbiased information.